মানুষ বৃত্ত ভাঙতে ভয় পায়। সে তার প্রচলিত গন্ডির বাইরে আসতে চায় না। এমনকি তার সন্তান আসুক তা-ও চায় না। আমার নরসুন্দর যিনি ছিলেন গত চল্লিশ-পঁয়তাল্লিশ বছর ধরে তার কাছেই আমি চুল কাটাতাম। কয়েক বছর আগে একদিন চুল কাটাতে গিয়ে দেখলাম তার ছেলেকে। ছেলেও তখন নরসুন্দর। সেদিন শুনলাম নরসুন্দর মারা গেছে। তার ছেলে এখন দোকানে। চুল কাটতে কাটতে ছেলেটি বলছিলো তার নাপিত হয়ে ওঠার কথা। বাবা তাকে কাজ শিখিয়েছে। দোকানটাও দিয়ে গেছে। এখন এ দোকান দিয়েই সে জীবন চালাচ্ছে। অন্য আর কিছুর কথা ভাবতে পারে না।
এই যে স্বর্ণকাররা যারা সোনার গয়না বানায় তাদের জীবনে কিন্তু সোনার চাকচিক্য কখনো ধরা দেয় না। বংশানুক্রমিকভাবেই তারা স্বর্ণকার। দোকানে সোনার গয়না বানাচ্ছে। অথচ এদের পারিশ্রমিক সবচেয়ে কম। ভারতের হীরা শ্রমিকদের মজুরি যে কত কম তা আমরা কল্পনাও করতে পারবো না। একসময় ধরে নেয়া হতো মা যে বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করছে, মেয়েও সে বাড়িতে গৃহকর্মী হবে। কারণ অনিশ্চয়তার ভয়। মেয়ে ভাবতো বাইরে কোথায় যাবো, পরিণতি কী হবে ইত্যাদি। তার চেয়ে এ বাড়িই ভালো। মার খেলেও অন্তত দুবেলা তো খেতে পারছি, অত্যাচার করলেও একজনই করছে, বাইরে গিয়ে না জানি কোন ঝামেলায় পড়বো!
অর্থাৎ আমাদের মূল শৃঙ্খল এটাই যে আমরা নতুন কিছুকে ভয় পাই। শৃঙ্খলগুলো কখনো ধর্মের নামে, কখনো রাষ্ট্রের নামে, কখনো সমাজের নামে, কখনো পিতৃপুরুষের নামে চলে আসছে।
Source: http://quantummethod.org.bd
No comments:
Post a Comment