July 28, 2011

অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) মুদ্রানীতির ঘোষণা

অনুত্পাদনশীল ও অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসায়ে ঋণ কমানো এবং উত্পাদন খাত, কৃষি, ব্যবসা ও অন্যান্য সেবা খাতে অর্থের জোগান নিশ্চিত করার তাগিদ নিয়ে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়েছে।

নতুন মুদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতির হ্রাস টানতে বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহের জোগানকে খানিকটা কমিয়ে আনা হয়েছে। তবে জাতীয় বাজেটে সরকারের ব্যাংকঋণের বড় লক্ষ্যমাত্রা থাকায় সেখানে খুব বেশি সংযত হতে পারেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান মুদ্রানীতির ঘোষণা করতে গিয়ে বলেছেন, ‘মোদ্দা কথা, প্রস্তাবিত মুদ্রানীতিটি হবে বাস্তবানুগ, সংযত ও সংহত।’

এক সংবাদ সম্মেলনে আজ বুধবার গভর্নর চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) মুদ্রানীতির ঘোষণা দেন। এ সময় ডেপুটি গভর্নর নজরুল হুদা, জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী, মুরশিদ কুলী খান, জ্যেষ্ঠ পরামর্শক আল্লাহ মালিক কাজেমীসহ শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নতুন মুদ্রানীতিতে আগামী ছয় মাসে মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধির হার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ। সরকারসহ রাষ্ট্রীয় খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ২৮ দশমিক ১০ শতাংশ। আর বেসরকারি খাতের ঋণের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১৮ শতাংশ।

সাধারণভাবে মোট দেশজ উত্পাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে মূল্যস্ফীতির হার যোগ করে সমপরিমাণ মুদ্রা সরবরাহ বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলে তাকে সংকুলানমূলক, এর চেয়ে কম হলে সংকোচনমূলক এবং তার চেয়ে বেশি হলে সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতি বলা হয়। কিন্তু, বাংলাদেশে মুদ্রানীতির আদলটি অতটা গভীর ও কার্যকর নয়।

এক প্রশ্নের জবাবে আল্লাহ মালিক কাজেমী বলেন, ‘আমাদের এখানে আর্থিক গভীরতা বিবেচনা করে আমরা প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির হারের সঙ্গে ঋণাত্মক চেনজিং ইনকাম ভ্যালোসিটি অব মানি (মুদ্রার আয়ের গতিবেগ) বিবেচনায় নিয়ে থাকি।’ তিনি জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসাব করে দেখেছে এখানে এই হার ৪ শতাংশের মতো। ফলে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ও সাড়ে ৭ শতাংশ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে যোগ করে মুদ্রা সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, গত অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ ঋণ ২৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে। এটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির তুলনায় বেশি। বড় অঙ্কের ঋণ প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি বিদেশি তহবিল কমে যাওয়ায় মূল্যস্ফীতি ও লেনদেনের ভারসাম্যে চাপ বেড়েছে। এ অবস্থায় ঋণপ্রবাহে কিছুটা সতর্ক অবস্থান নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নতুন মুদ্রানীতিতে চলতি অর্থবছর শেষে অর্থাত্ ২০১২ সালের জুন মাসে অভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ২০ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসেবে গত মে মাস শেষে অভ্যন্তরীণ ঋণের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৯ শতাংশ। আর অর্থবছর শেষে তা ২৭ দশমিক ৮ শতাংশ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে মে মাস শেষে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ। যা জুন মাসের হিসাব নিয়ে ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ হবে হিসাব করা হচ্ছে।

প্রথম আলো July 27, 2011

No comments: